চর্ম পীড়া (একজিমা)

রোগ বিবরন : ইহা সাধারনত ছোয়চে রোগ ।ফোস্কার ন্যায় কুস্কুরির মত পুজ যুক্ত রস যুক্ত শুস্ক বিভিন্ন প্রকার চর্ম রোগ দেখা যায় ।ইহা অতিশয় যন্ত্রনা দায়ক পীড়া ।সহজে আরোগ্য হইতে চায় না ।ইহাতে রক্ত দূষিত হইয়া পড়ে ।অপরিস্কার অপরিচ্ছন্নতার কারনে এই রোগ অধিক হয় ।

চিকিৎসা

গ্রাফাইটিস (Graphites) : স্থুলকায় সন্দেহ পরায়ন শীত কাতর রোগীর কানের পার্শে মুখে মাথায় চক্ষুর পাতয় জন নের্দ্রিয়ে অন্ডকোষে হাতে আয্গুলে পায়ের নখে ।প্রভূতি স্থানে চামড়া মোটা তাহাতে ভীষন চুলকানী ।ক্ষত হইতে মধুর মত গাঢ় আঠালো রস নির্গত হয় ।মধুর ন্যায় আঠাযুক্ত কষই গ্রাফাইটিসের প্রধান পরিচয় ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 1m দুই তিন মাত্রা সেবনেই উপকার পাওয়া যায় ।

পেট্রোলিয়ম (Petroleum) : শীত কাতরে রোগী শীত কালে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতে পায়ে অন্ডকোষে ব্যাপক আকার চর্ম পীড়া দেখা দেয় ।অত্যন্ত চুলকায় রস পড়ে হাত পা গা ফাটে গ্রীষ্ম কাল আসিলে আস্তে আস্তে আরোগ্য হইয়া যায় ।ইহাই পেট্রোলিয়ামের প্রধান পরিচয় ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 দিনে দুই বার। 200 দিনে এক বার ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

ক্যালি বাইক্রম (Kali Bich) : বিভিন্ন প্রকার চর্ম পীড়া গ্রীষ্মকাল আসিলে বৃদ্ধি পায় শীত কালে আপনা সারিয়া যায় ।রোগী শীত কাতর হইলে ও গ্রীষ্মকাল কাল ছেলে অসহ্য ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 সকাল বিকাল দুই বার ।পুরাতন রোগে 10m বা আরো উচ্চ শক্তি ।

মেজেরিয়ম (Mezerium) : শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুজলি পাচড়া একজিমা তাহার উপর মামড়ি পড়ে ।মামড়ির নীচে হলুদ বা সাদা রঙের গাঢ় পুজ ।ভীষন চুলকানী ছেলে মেয়েদের মাথায় একজিমার ইহা খুব ভাল কাজ করে ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 বা 1m পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি দুই মাত্রা সেবনেই উপকার হয় ।

সাইকিউটা (Cicuta Viro) : মাথায় ছোট বড় পুজ পূর্ণ কুস্কুরি একজিমা তাহার উপর মামড়ি পড়ে। মামড়ির নীচে হলুদ বা সাদা রঙের গাঢ় পুজ মামড়ির নীচে হলুদ রেঙর পুজ সমস্ত মাথায় ছড়াইয়া পড়ে ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 দুই মাত্রা সেবনেই আরোগ্য হয় ।উচ্চ শক্তি অধিক ফল দায়ক ।রোগী আরোগ্য হইয়াছে ।

ভিনকা মাইনর (Vinca Minar) : মাথায় মুখে কানের পশ্চাতে একজিমা তাহার উপরে চটা বা চোয়ালে পড়ে বা ঘাড়ে গ্ল্যান্ড ফুলিয়া উঠে ।

সেবন বিধি : শক্তি 6 বা 30 প্রত্যহ তিন মাত্রা ।পুরাতন রোগে 200 দিনে দুই বার ।

আর্কটিয়ম লাপ্পা (Arctium Lappa) : নাকে মুখে মাথায় কানের গোড়ায় একজিমা ।সর্বদা রসে ভিজিয়া থাকে অত্যন্ত দুর্গন্ধ ঘায়ের উপরে সাদা রঙের মামড়ি পড়ে ।কানের পার্শে চোয়ালে বা ঘাড়ে গ্ল্যান্ড ফুলিয়া উঠে ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x ২-৪ ফোটা বয়স অনুপাতে দৈনিক চার মাত্রা ।

আর্সেনিক এলব (Arsenic Alb) : পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সৌখিন শীত কাতর রোগী একজিমায় অত্যন্ত চুলকানী যত চুলকায় ততই চুলকাইতে ইচ্ছা চুকানির পর ভীষন জ্বালা সেই জ্বালার কথা ভবিয়অ চুলকানী বন্ধ কলে ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 দুই মাত্রা উপকার পাওয়া যায় ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

এন্টিম ক্রুড (Antim Crud) : গোসলে অনিচ্ছা হাতে কনুই পায়ে হাটুতে পাছায় পদ্না কাটার মত উদ্ভেদ চুলকায় ।জিহ্বায় সাদা বর্ণের প্রলেপযুক্ত রোগীদের এন্টিম ক্রুড অধিক উপযোগী ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 দুই মাত্রাই উপকার আরোগ্য হয় ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

সোরিনাম (Sorinum) : শরীর অত্যন্ত কদাকর খোস পাচড়া নানা প্রকার চর্ম পীড়া ভয়ানক পায়খানার প্রস্রাবে মুখের লালা নাকে সর্দি কানে পুজ ভীষন দুর্গন্ধ শরীরে এত দুর্গন্ধ যে লোক কাছে বসিতে চায় না ।তাই এই ধাতুর রোগীতে ইহা অধিক উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 বা 1m দুই মাত্রাই উপকার হয় ।পুরতান রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

কোর্যালিয়ম (Croallium) : হাতের পায়ের তলায় একজিমা অত্যন্ত চুলকায় পায়ের তলায়েএকজিমা এই ঔষধ প্রয়োগ করিতে দিয়া আমি কয়েকটি রোগী আরোগ্য হইতে দেখিয়াছি ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 দিনে দুই মাত্রা ।পুরাতন রোগে উচ্চ শক্তি ।

নেট্রাম কার্ব (Natrum Carb) : রোগী অত্যন্ত শীত কাতর ।শীত কালে ঠান্ডা একেবারেই অসহ্য ।হাতে আঙ্গুলে ফাটা ফাটা একজিমা ।একজিমা অত্যন্ত চুলকায়

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 সকাল বিকাল দুই চার মাত্রা সেবনেই উপকার হয় ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি দুই মাত্রা ।

সালফার (Sulphur) : খুজলি পাচড়া বিখাউজ নানা প্রকার চর্ম পীড়া ।অত্যন্ত চুলকানী যতই চুলকায় ততই চুলকানী বাড়ে ।চুলকানীর পর জ্বলে ।রোগী গরমে কাতর স্নান করতে চায় না ।স্নানে তাহার সকল রোগ যন্ত্রনা বৃদ্ধি ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 দুই মাত্রা ।মাত্রাই উপকার হয় ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

ডলিকাস (Dolicus) : শরীরে কোন প্রকার উদ্ভেদ নাই তবুও ভীষন চুলকানী ।যত চুলকায় ততই চুলকানী বাড়ে ।উদ্বেদ বিহীণ চুলকানীতে ডলিকস উত্তম ঔষধ ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 শক্তি প্রত্যহ এক মাত্রা সকাল বিকাল দুই মাত্রা ।

এনাগেলিস (Anagallis) : হাতে পায়ে আঙ্গুলে একজিমা চামড়ার নীচে ঘামাচি মত এক প্রকার উদ্ভেবদ ।অত্যন্ত চুলকায় ইহাতে এনাগেলিস উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 দিনে দুই মাত্রা ।কিছুদিন সেবনে না উপকার হইলে 200 শক্তি এক মাত্রা ।পুরাতন আরো উচ্চ শক্তি ।

টেলুরিয়ম (Telleurium) : মাথা মুখে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রিং দাদ অথাৎ গোলাকার দাউদে অত্যন্ত চুলকানীতে ইহা মহ্যেষধ ।

সেবন বিধি : শক্তি 6 বা 30 দিনে দুই তিন বার কিছু অধিক দিন ব্যবহার করিতে হয় ।পুরাতন রোগে ২00 বা আরো উচ্চ শক্তি ।

ব্যাসিলিনাম (Becillinum) : শুস্ক একজিমায় অব্যর্থ ।শরীরের বিভিন্ন স্থানে একজিমা চুলকাইলে গমের ভূষির মত আউশ উঠে ।চুলকানী যথেষ্ট কিন্তু চুলকাইতে পর কোন রস বা কোষ উঠে না ।বদ মেজাজী রাগী শীত কাতর রোগীদের বেলায় ইহা অধিক খাটে ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 সকাল বিকাল দিনে দুই মাত্রা ।উপকার না হইলে আরো উচ্চ শক্তি ।

রাস টক্স ও লিডম পাল (Rhus Tox & Ledem Pal) : এক বা উভয় পায়ে হাটুর নীচে কাউর ঘা বিখাইজ চুলকায় রস পড়ে সকালে রাস টক্স 30 বিকালে লিডম 30 এইভাবে কিছুদিন সেবনের পর 200 শক্তি উক্ত নিয়মে আরো কিছুদিন সেবন করিলে কাউর ঘা আরোগ্য হয় ।ডাক্তার টেষ্টির অভিজ্ঞতা ।আমি কাউর ঘায়ের রোগীতে উক্ত নিয়মে ঔষধ দুইটি ব্যবস্থা করিয়অ বহু রোগী আরোগ্য হইতে দেখিয়াছি ।রোগ আরোগ্য হইয়া গেলে ও কিছুদিন পযন্ত ঐ ঔষধ দুইটি ব্যবহার করিলে কাউর ঘা পুনঃ আক্রমনের ভয় থাকে না ।

স্পঞ্জিয়া (Spogia) : কোন প্রকার চর্ম পীড়ায় নির্বাচিত ঔষধ প্রয়োগ করিয়া উপকার হয় ।কিংবা কোন ঔষদের লক্ষন না শিলিলে এই ঔষধ সেবনে নিশ্চয়ই আরোগ্য হইবে ।

সেবন বিধি : শক্তি Q২-৪ ফোটা বয়ষ অনুপাতে সামান্য জলের সহিত দিনে তিন বার ।

এলোজ (Aloge) : খুজলি পাচড়া অন্ডকোষৈ একজিমা নানা প্রকার চর্ম পীড়া শীত কাল আসিলে দেখা দেয় ।অলস প্রকৃতির মেজাজ খিটখিটে রাগী গরমে কাতর এই ধাতুর রোগীদের ইহা অধিক উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 200 বা 1m সকাল বিকাল দুই মাত্রা ।পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ।

ক্রোটন টিগ (Croton Tig) : অন্ডকোষে রসযুক্ত বা শুস্ক একজিমা ভয়ানক চুলকায় চুলকানির জন্য ঘুমের ব্যঘাত ।শিশুদের মাথায় কুস্কুরিযুক্ত চর্মরোগে উপড় চটা পড়ে চটা উঠিয়া গেলে রস ঝরে এই প্রকার চর্ম রোগের সহিত উদরাময় ক্রোটনে আরোগ্য করিতে পারে ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 তিন দিন অন্তর এক মাত্রা ।পুরাতন রোগে পক্ষকাল অন্তর ।

এনা কার্ডিয়াম অক্সি (Anacardium Oce) : ছেলে মেয়েদের নাকে মুখে বুকে বা শরীরে বিভিন্ন শীত কালে বৃদ্ধি ।

সেবন বিধি : শক্তি 6, 30 দিনে তিন বার ।

বাইওকেমিক চিকিৎসা

ক্যালকেরিয়া ফ্লোর (Calcarea Flour) : শরীরের বিভিন্ন স্থানে চর্ম পীড়া ফাটা ফাটা চর্ম পীড়া শীত কালে বৃদ্ধি ।

সেবন বিধি : শক্তি 12x হইতে উচ্চ শক্তি ।১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে দিনে দুই বার ।

ক্যালকেরিয়া ফস (Calcarea Phos) : রক্ত হীণ ফেকাশে দুর্বল রোগীদের নানা প্রকার চর্ম পীড়ায় ও বৃদ্ধি বয়সে গাত্র চুলকানীতে ইহা অব্যর্থ ।

সেবন বিধি : শক্তি 12x ১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে সকাল বিকাল দিনে দুই মাত্রা ।

ক্যালি মিউর (Kali Mur) : বিভিন্ন প্রকার চর্ম পীড়ায় ভীষন চুলকানী ।সাদা আঠালো রস নির্গত হয় ।গ্রীষ্ম কালে শিশুদের গায়ে জলপূর্ণ ফোস্কায় ইহা অব্যর্থ ।

সেবন বিধি : শক্তি 6x,12x ১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়ষ অনুপাতে প্রত্যহ দুই মাত্রা ।প্রয়োজনে আরো উচ্চ শক্তি ।

ক্যালি সালফ (Kali Sulph) : চর্ম পীড়া হইতে হলুদ বর্ণের আঠালো দুর্গন্ধ রস নির্গত হয় ।চুলকায় বাহ্যিক মলমাদি প্রয়োগ করিতে চর্ম পীড়া বসিয়া অণ্য রোগের উৎপত্তে আরো উচ্চ শক্তি ।১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে দিনে তিন বার ।

ক্যালকেরিয়া সালফ (Calcarea Sulph) : মাথায় পুজ পূর্ণ একজিমা চটা পড়ে চটার নীচে হলুদ রঙের গাঢ় পুজ ।

সেবন বিধি : শক্তি 12x হইতে আরো উচ্চ শক্তি ।১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়ষ অনুপাতে দিনে তিন বার ।

নেট্রাম ফস (Natrum Phos) : শিশুদের মাথায় দাদে দাউদ নেট্রাম ফস উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 12x ১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়ষ অনুপাতে দিনে তিন বার ।

পথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা

সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছ্ন্ন থাকিবে ।রোগীর ব্যবহৃত কাপড় চোপড় গরম জলে ধৌত করিয়অ রাখিবে ।ঘৃত দুগ্ধ সুপথ্য মাংস ডিম টক খাওয়া বাহরি হয় না ।তথায় মৌচকের কাচা মোম গলাইয়া সরিষার সহিত মিশাইয়া বাহ্যিক প্রয়োগ করিলে উপকার হয় ।

রোগ বিবরন : জামান সাহেব সরকারী অফিষারের ক্লার্ক ।তাহার ছেলে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে ।দুই বৎসর যাবৎ হাতে পায়ে পাছায় উরুতে বড় বড় পাচড়া অত্যাধিক চুলকানী ।পাচড়া উপর মামড়ী চটা তুলিলে সাদা গাঢ় পুজ ।এলাপ্যাথিক কবিরাজী ও নানা প্রকার মলম ব্যবহার করিয়া আরোগ্য হয় নাই ।অবশেষৈ আমার শরনাপন্ন হয় ।আমি তাহাকে মেজেরিয়ম 10m এক মাত্রা নিজ হাতে কোন সবেন করাইয়া এক মাসের ফাইটম প্রত্যহ এক মাত্রা সেবন করিতে দেওয়ায় ছেলেটি সম্পূর্ণ আরোগ্য হয় ।