কলেরা (ওলা উঠা)

রোগ বিবরন : ইহা ভয়ানক প্রান নাশক এক সংক্রামক ব্যধি ।এক প্রকার জীবানু হইতে এই রোগের উৎপত্তি ।গুলা উঠার এই জীবানু জল কিংবা দুগের্ধর সহিত কোন প্রকার খাদ্য দ্রব্যার সহিত মিশ্রিত হইয়া উদরস্থ হইলে এই রোগ আক্রমন করে ।এই রোগে চাউল ধোয়া জলের ন্যায় কিংবা কুমাড়া পচা জলের মত দাস্ত বুম হইতে হইতে পরে অবসন্নতা হইয়া পড়ে চোখ মুখ বসিয়া যায় ।হাতে পায়ে খিল ধরে ।গাত্র দাহ ছটফটানি অদ্যম্য জল পিপাসা নাড়ী লোপ সর্বাঙ্গীন ঠান্ডা ঘাম প্রসাব বন্ধ শ্বাস কষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ উপস্থিত হইয়া রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হইয়া পড়ে ।

চিকিৎসা

একোনাইট ন্যাপ (Acomite Nep) : রোগের প্রথমাবস্থায় অন্তদাহ ছটফটানি অনবরত এপাশ ওপাশ করা অস্থিরতা মৃত্যু ভয় অদম্য জল পিপাসা অধিক পরিমানে ঘন ঘন জল পান করে চাউল ধোয়া জলের মত বাহ্যে বমি মুখের চেহারা মরার মত ।সর্বাঙ্গ শীতল নাড়ী সুতার মত ক্ষীন ইত্যাদি লক্ষনে ইহা অমোঘ ।

সেবন বিধি : শক্তি 1x ৮ ফোটা চার আউন্স জলে মিশাইয়া এক বা দুই চামচ মাত্রায় ১০-১৫ মিনিট পর পর ।

আর্সেনিক এলব (Arsinic Alb) : অস্থিরতা ছটফটানি মৃত্যু ভয় অত্যন্ত জল পিপাসা অল্প পরিমানে ঘন ঘ জল পান করে ।জল পান মাত্রই পেট বেদনা বাহ্য ক্ষীন সমস্ত উপসনের বৃদ্ধি হয় ।পেট জলে চাউল ধোয়া জলে মত বাহ্যেতে অত্যন্ত দুর্গন্ধ শ্বাস লইতে কষ্ট ।ইত্যাদি লক্ষনে ইহা অব্যর্থ ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x২-৩ ফোটা সামান্য জলসহ ১০/১৫ মিনিট অন্তর ।

সিকেলি কর (Secalc Cor) : চাউল ধোয়া জল কিংবা কলের জলের মত মল অনবরত বাহ্যের বমি ঠান্ডা জল পানের অত্যন্ত আগ্রহ বমি অপেক্ষা বমি বমি ভাব বেশী ।শরীর বরফের মত ঠান্ডা অত্যন্ত জ্বাা শরীরে কাপড় রাখিতে পারে না ।উলঙ্গে হইয়া থাকেতে চায় ।দৃর থেকে পাখার বাতাস চায় ।মুখা বিসিয়া যায় ।ঠান্ডা নাড়ী সুতার মাত ক্ষীন ইত্যাদি লক্ষনে ইহা উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি Q ৩-৪ ফোটা সামান্য জলসহ অর্ধ ঘন্টা অন্তর ।

কার্বোভেজ (Carbo Veg) : ওলা উঠা পীড়ার চরম অবস্থায় সর্বাঙ্গীন শীতল ।নাড়ী লোপ চেতনা বা অচেতনা ভাবে পড়িয়া থাকে ।নড়াচড়া করিবার ক্ষমতা থাকে না ।শ্বাস প্রশ্বাস অত্যন্ত ধীর ।খুব কাছে থেকে পাখার বাতাস চায় ।গলার স্বর বসিয়া যায় ।কথা বলিতে পারে না ।

সেবন বিধি ;শক্তি 6,30 দশ বিশ মিনিট অন্তর ।

ভিরেট্রাম এলব (Veratum Alb) : চাউল ধোয়া জলের ন্যায় ভেদ বমি বমির চেয়ে বাহ্যের ভাগই অধিক ।অত্যন্ত দুর্বল কপালে ঠান্ডা ঘাম অদ্যম্য জল পিপাসা হস্তপদে খিচুনি ।পেটে অসহ্য বেদনা কপালে শীতল ঘর্ম ভিরেট্রিমের প্রধা পরিচয় ।

সেবন বিধি : শক্তি 6,30 অর্ধ ঘন্টা অন্তর ।

কুপ্রাম মেট (Cuprum Met) : চাউল ধোয়া জলের মত বা কুমড়া পচার মত বাহ্য ও বমি ।জল পানের সঙ্গে সঙ্গে বাহ্য ।গাত্র দাহ সমস্ত পেশীতে খিল ধরে ।বৃদ্ধ আঙ্গুল মুষ্টিবদ্যা করিয়া খিচে প্রভুতি লক্ষনে ফলপ্রদ ।

সেবন বিধি : শক্তি 6,30 ঘন ঘন সেব্য ।

ক্যাস্ফর (Camphor) : রোগের হঠাৎ বৃদ্ধি চাউল ধোয়া জলের মত পচার অতি অল্প পায়খানার শীত শীত ভাব শরীর বরফের মত ঠান্ডা স্বর ভঙ্গ চোখ মুখ বসিয়া যায় ।পুনঃ পুনঃ বমির ভাব শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট অজ্ঞান ভাব ।প্রস্রাব বন্ধ ও অনস্ন্ন নিঝুম হইয়া পড়িয়া থাকে ।গায়ে কাপড় রাখিতে চায় না ইত্যাদি লক্ষনে ইহা উপযোগী ।

সেবন বিধি : শক্তি Q এক ফোটা চিনি বা বাতাসার সহিত ১০ মিনিট পর পর ।শিশুদের অর্ধ বা সিকি মাত্রা ।

বাইওকেমিক চিকিৎসা

ফেরাম ফস (ferrum Phos) : ওলা উঠার প্রথমাবস্থায় অজীর্ণ ভেদ ও বমন অবিরত জল পিপাসা পানের অনতি পরেই বমি ।অত্যন্ত অস্থিরতা ইত্যাদি লক্ষনে ইহা উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 6x১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে ঘন ঘন সেবন করিতে হয় ।

ক্যালি ফস (Kali Phos) : পান্তা ভাতের জলের ন্যায় অত্যন্ত দুর্গন্ধ যুক্ত বাহ্য চোখ মুখ বসিয়া যায় ।শরীর বরফের মত ঠান্ডা ।স্বর ভঙ্গ তন্দ্রা ভাবে পুড়য়া থাকে ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x ১-৩ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে ঘন সেবন করিতে হয় ।

নেট্রাম ফস (Natrum Phos) : কৃমি জনিত কলেরায় এই ঔষধটিকে প্রাধান্য হয় ।

সেবন বিধি :শক্তি 3x ২-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে ঘন ঘন কয়েক মাত্রা ।

ম্যাগনেশিয়া ফস (Magenesia Phos) : পিচকারীর ন্যায় বাহ্যে বমি হইয়া সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখিবে ।মল মূএ বমন গর্ত করিয়া পুতিয়া রাখিবে ।মল মূ্এ বমন কখনও পা ঠান্ডা হইয়া গেলে কিংবা খিল ধরিলে এই ঔষধ উপকারে আসে ।হাত পা উদর খিচুনি নিবারনের জন্য ইহা এক মাত্র ঔষধ ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x ১-৪ বড়ি বয়স অনুপাতে গরম জলসহ পুনঃ পুনঃ সেবন করিতে হয় ।

পথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা

কলেরার রোগীকে স্থির ভাবে শোয়াইয়া রাখিবে। রোগীর ঘর বিছানাপত্র সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখিবে ।মলমূত্র বমন গর্ত করিয়া পুতিয়া রাখিবে মল মূত্র বমন কখনও নদী খালে বিলে পুকুর কুয়া কিংবা টিউব ওয়েলে ধোয়া মোছা করিবে না রোগীর হাত পিপাসায় শীতল জল পান কিংবা বরফ চুষিতে দিবে পীড়ার বাড়াবড়ি অবস্থায় কোন পথ্য দেওয়া উচিৎ নয় ।কেবল মাত্র শীতল জল পান করিতে দিবে ।তীব্র অবস্থা কমিয়া গেলে এরারুট বা বার্লির জলের সহিত লেবুর রস দিয়া খাইতে দিবে ।মল স্বভাবিক আকার ধারন করিলে সুরুচাউলের অন্ন শিং বা মাগুর মাছের জোল প্রভুতি পথ্য দেওয়া যাইতে পারে ।মাতার কলেরা হইলে শিশুকে স্তন্য পান হইতে বিরত রাখিবে ।