ইরিসিপেলাস (বিসর্প)

রোগ বিবরন : বিসর্ণ রোগে চর্মে প্রদাহ স্ফীত বেদনা জ্বালা প্রভৃতি উপস্থিতে হয় ।আক্রান্ত স্থানে রক্ত লাল বা কালচে দেখা যায় ।গাত্র দাহ শির পীড়া বুম বমি ভাব বা বমন উপর লক্ষন উপস্থিত হয় ।আক্রান্ত স্থানে ব্যথা জ্বালা কখনও কখনও চর্মের ফোস্কা হইয়া ফাটিয়া রস নির্গত হয় ।

চিকিৎসা

একোনাইট ন্যাপ (Aconic Nap) : প্রদাহিত স্থান গরম লাল ফুলা জ্বালা বেদনা ঠান্ডা লাগিয়া পীড়ার মাঝে মাঝে ঘাম অত্যন্ত জ্বরে মৃত্যু ভয় ছটফটানি অদম্য জল পিপাসা ইত্যাদি লক্ষনে ইহা অব্যর্থ ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x 6 দুই ঘন্টা অন্তর ।

বেলেডোনা (Belladona) : আক্রান্ত স্থান চকচকে লাল ফুলা জ্বালা গরম দপদপানি ব্যথা জ্বর মাঝে মাঝে অত্যন্ত জ্বরে রোগী প্রলাপ বকে ইত্যাদি লক্ষনে বেলাডোনা উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 3x দুই ঘন্টা অন্তর প্রয়োগ করিতে হয় ।

এপিস মেল (Apis Mel) : এপিসের বিসর্প প্রায়ই মুখে বা শরীরের ডান দিক আক্রান্ত করে ।আক্রান্ত স্থান ফুলিয়া উঠে চোখের নীচের পাতা অধিক ফুলা দেখা যায় ।হুল ফোটানো ব্যথা জ্বালা সেই জ্বালা ঠান্ডায় উপশম গরমে বৃদ্ধি পিপাসাহীন উক্ত পীড়ায় প্রস্রাব কমিয়া যায় ।

সেবন বিধি : শক্তি 3,6 বা 30 তিন ঘন্টা অন্তর ।

আর্সেনিক এলব (Arsinic Alb) : আক্রন্ত স্থানে অত্যন্ত জ্বালা সেই জ্বালা উত্তেপে উপশম ।অস্থিরতা জল পিপাসা অল্প মাত্রায় ঘন ঘন জল পান দিনে বা রাতে ১২ টা হইতে ২ টা যন্ত্রনা বৃদ্ধি ইত্যাদি লক্ষণে ইহার 30 বা 200 শক্তি দুই চার মাত্রায় সেবনেই উপকার হয় ।

রাস টক্স(Rhus Tox) : শরীরের বাম দিকে বিসর্প ।আক্রান্ত স্থান ফোলা ফোস্কার মত উদ্ভেদ অত্যন্ত জ্বালা যন্ত্রণা গাত্র বেদনা অস্থিরতা অসহ্য চুলকানী ঠান্ডায় বৃদ্ধি গরমে উপশম ইত্যাদি লক্ষনে ইহা উপকারী।

সেবন বিধি : শক্তি 3,6 বা 30 তিন ঘন্টা অন্তর ।

ল্যাকেসিস (Lachisis) : বিসর্প মুখ মন্ডলের বাম পার্শেই অধিক হইতে দেখা যায় ।আক্রান্ত স্থান নীল বা বেগুনী রং ধারন করে ।ইহার জ্বালা যন্ত্রনা রাতে বৃদ্ধি গরমে উপশম ঘুমে বা ঘুম ভাঙ্গিলেই রোগ যন্ত্রনা বৃদ্ধি উত্তাপ সহ্য হয় না ।

সেবন বিধি : শক্তি 30 বা 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা ।টক খাইলে ল্যাকসিসের ক্রিয়া নষ্ট হয় ।

এচিনেশিয়া (Echinacea) : ইরিসিপেলার একটি উত্তম কাযকারী ঔষধ ।

সেবন বিধি : শক্তি Q ৩-৪ ফোটা অর্ধ ছটাক জলসহ তিন ঘন্টা অন্তর সেবন ও আক্রান্ত স্থানে ইহার Q বাহ্যিক প্রয়োগ বিধেয় ।

ক্যাস্থারিস (Cantharis) : জলপূর্ণ ফোস্কা ভয়নক জ্বালা ও বেদনায় রোগী অস্থির হয়ে পড়ে ।ফোস্কাযক্ত ইরিসিপেলাপের রোগী কাদিতে থাকে শীতে কাতর রোগী উক্ত লক্ষনে ক্যাস্থারিগ উপকারী ।

সেবন বিধি : শক্তি 6,30 দুই তিন ঘন্টা অন্তর ।

বাইওকেমিক চিকিৎসা

ফেরাম ফস(Ferrum Phos) : প্রদাহের প্রথমবস্থায় আক্রান্ত স্থান ফোলা লাল গরম বেদনা জ্বর অবস্থায় ফেরাম ফস উপকারী ।পীড়িতে স্থানে ফোস্কা কঠিলে উক্ত ঔষধের সহিত ক্যালি মিউর পর্যাক্রমে সেবনে পীড়া আরোগ্য হয় ।

সেবন বিধি : শক্তি 6x ১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে তিন ঘন্টা অন্তর সেব্য ।

পথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা

যাহাতে ঠান্ডা না লাগে সেই দিকে লক্ষ্য রাখিতে হইবে । পীড়িতে স্থানে চুলকানী নিবারনের জণ্য ময়দার গুড়া ছড়াইয়া দিলে চুলকানীর উপশম হয় ।জ্বর অবস্থায় সাগু বার্লি ইত্যাদি লঘু পথ্য ব্যবস্থা ।পীড়া স্পূর্ণ আরোগ্য না হওয়া পযন্ত মাছ মাংস ডিম টক ইত্যাদি নিষিদ্ধ ।

রোগী বিবরন : নরসিংদী শহরের পাশ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্ধা তানজিনা আক্তার বয়স ১৩ বছর ।বাম বাহুর নিচে ফোস্কাযুক্ত বিসর্প জ্বর ব্যথা চুলকাণী জ্বালায় অস্থির ।ফেরাম ফস ও ক্যালি মিউর 6x তিন বড়ি এক মাত্রা দুই ঘন্টা অন্তর পর্যায়ক্রমে চার মাত্রা ।পরিবহন সংবাদ বিশেষ কোন উপকার হয় নাই জ্বর মাত্র কমিয়াছি ।বয়স টক্স 30 তিন ঘন্টা অন্তর চার মাত্রা ।দুই তিন দিন পর সংবাদ বেশ কিছু কমিয়াছে ।রাস টক্স 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা ।ইহাতেই মেয়েটি স্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে ।